।। মৃত্যু ।।
সায়ন
অঘোরে তিমিরে যবে ছিল চরাচর,
চতুর্দিক আঁধারেতে কলুষিত অতি,
ভ্রমিত কন্টকসম বিষ সর্প সেথা,
পাপের আগার ছিল, অতি নিচাসয়।
অসুরের অমুরতি বিমতি অগতি
ছিল, আর অরি পাশ ছিল হেথা সেথা।
হৃৎ পিঞ্জর সেথা মরিত দুর্দম
পিশাচ শোণিত স্রোতে ভাসিত উল্লাসে।
না ছিল বিধুর প্রভা না অর্ক জ্যোতি,
না জ্যোতিষ্ক দল সেথা লইত বিশ্রাম।
এমনি চলিত সেথা নিকৃষ্ট শ্বাসন,
অতুল মানব সেথা মরিত নিয়ত।
একদা সেথায় বাজিল মহারণ
দুন্দুভি মর্দল বাজিছে ঘন ঘন,
হাহাকার লাগি সেথা দুর্দম কম্পনে
শক্তিশেল অগ্নিপিণ্ড ঝরিছে অঝরে।
ত্রাহি রবে ক্ষণে ক্ষণে মৃত রাশি রাশি
পড়িছে ধরার মাঝে, হাহাকার ধ্বনি।
একে একে মহালয়ে প্রাণ যত ছিল,
নিঃশেষ হইল সব, যেথা ছিল যত।
শুষ্ক হইল ভূমি, জীব শূন্য হল।
প্রাণ যত ছিল সবে তৃষিত পিঞ্জরে,
মরিল নিশ্বাস ত্যাজি, কুল লয়ে সনে।
হুতাশন গ্রাসিল সবে একে একে করি।
উঠে যদি ধ্বনি আরবার ধরাতলে
মন্দ্রিত পিঞ্জর যদি পুনঃ নিশ্বাসে
আদি কোষ হতে যদি জন্মের সঞ্চয়
আর বার হয়, এ মর্মরের মাঝে।
বৃথা দুঃখ বৃথা স্মৃতি মনের সদনে,
বৃথা হিংসা,রাগ আর বৃথা অহংকার।
যে যায় সে রাখি যায় স্মৃতির সরণী
কার তরে হায়! এ জীবন মরনে।
স্হিতির সংশয়ে হায় বারেক লাঞ্ছনা,
কার বা কীসের স্হিতি? পদ লালাতুরা
সবই জ্বলে হুতাশনে নীরবে বিষাদে,
তবুও কেন দ্বন্ধ মিছে এ সংসারে।।